২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • মতামত >> শিল্প ও সাহিত্য >> সম্পাদকীয়
  • শুদ্ধ বাংলা ভাষা চর্চায় বর্তমান প্রজন্মের অনাগ্রহ
  • শুদ্ধ বাংলা ভাষা চর্চায় বর্তমান প্রজন্মের অনাগ্রহ

    আল-আমিন মাসুম
    শুদ্ধ বাংলা ভাষা চর্চায় বর্তমান প্রজন্মের অনাগ্রহ মানুষ তার মনোভাব প্রকাশ করে থাকে ভাষার মাধ্যমে। প্রতিটি মানুষের কাছে নিজস্ব মাতৃভাষায় কথা বলার যে আত্নতৃপ্তি; অন্য ভাষায় তা হয়না। তাই মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। প্রতিবছর এই মাসটি এলে আমরা আমাদের নিজস্ব মাতৃভাষা বাংলাকে গুরুত্ব দেয়, বাংলা ভাষার কথাবলি।বাংলা ভাষা নিয়ে আমরা আলোচনা সভা, সেমিনারের আয়োজন করে থাকি। শ্রদ্ধার সহিত ভাষা শহীদের স্মরণ করে থাকি। সর্বত্র বাংলা ভাষার ব্যবহার ও বাংলা ভাষা ছড়িয়ে দেওয়ার নানা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। এ মাসে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে আয়োজন হয় বইমেলার। তার মধ্যে বাংলা একাডেমির বইমেলা আমাদের সকলের কাছে প্রাণের মেলা হিসেবে পরিচিত। অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বই মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত থাকে লেখক,পাঠক, প্রকাশ, ও কবিদের পদচারণায়। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) মাতৃভাষা রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আন্দোলন সংঘটিত করে ভাষার জন্য আত্ন বলিদান দিয়েছিলো বাংলার অগনিত দামাল ছেলেরা। শহীদ হয়েছিলো রফিক,জব্বার,শফিউর,সালাম,বরকত সহ অনেকেই। এটাই ছিলো বিশ্বে মায়ের ভাষার জন্য প্রথম শহীদ হওয়ার ঘটনা। যার ফলশ্রুতিতে ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা  ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহেে এ দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে; আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি কতটুকু যত্নবান? বর্তমানে আমাদের বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন । গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরাকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে; তরুণদের বাংলা উচ্চারণ নিয়ে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।"প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষনে বলেন, ইদানিং বাংলা বলতে গিয়ে ইংরেজি বলার প্রবনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। জানিনা এটা অনেক ছেলেমেয়ের মাঝে সংক্রামক ব্যাধির মত ছড়িয়ে গিয়েছে। তারা মনে করে এভাবে কথা না বললে সম্মান ক্ষুন্ন হয় এমন একটা ভাব তাদের। এই জায়গা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। অন্য ভাষার প্রতি বৈরিতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিজের ভাষা আগে শিখতে হবে। অন্য ভাষাও শিখতে হবে ,তবে মাতৃভাষাকে ভুললে চলবেনা।" বর্তমান প্রজন্মের বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তা তরুণদের মাঝে লক্ষনীয়। দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়েও উঠছে প্রশ্ন? বাংলা ভাষা শিক্ষাকে উপেক্ষা করে বিদেশি ভাষাকে গুরুত্বের সহিত দেখানো হচ্ছে। বিভিন্ন শ্রেণীতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীর মাঝে বিশেষ করে ইংরেজি বলার প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের মাঝে বাংলা শব্দের ভুল বনান, উচ্চারণ লক্ষ করা যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে বিদেশি সংস্কৃতি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাজানো হচ্ছে নানা ধরনের হিন্দি ও বিদেশি গান। ছেলে ও মেয়েরা উক্ত গানের তালেতালে নুত্য করছে। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে ভুল বানানের ছড়াছড়ি। সরকারি নানা দপ্তরের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ভুল বানান নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রচারপত্রে, ব্যানার, ফেস্টুন,বিলবোর্ড, সাইনবোর্ডে বাংলাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। মহামান্য হাইকোর্টের রায় থাকা স্বত্বেও সাইনবোর্ড, বিলবোর্ডে বাংলা নাম ব্যবহার না করে ইংরেজিতে লেখা হচ্ছে। দু:খের বিষয় এইযে, বর্তমানে গণমাধ্যম ও সংবাদপত্রেও ভুল বানান লক্ষ করা যাচ্ছে। বাংলা একাডেমির প্রমিত বানান অনুসরণ না করে লেখা হচ্ছ খবর। সুতারাং বাংলা ভাষার ব্যবহার, বানান নিয়ে; বিভিন্ন ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ও প্রতিষ্ঠানসমূহের ভুলের কথা বলে শেষ করা যাবেনা।এখন সময় থাকতে তরুণদের মাঝে বাংলা ভাষার প্রতি মনোনিবেশ করা ও ভালোবাসা জাগানোর জন্য অভিভাবক, শিক্ষক, সিনিয়রদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। এ ব্যাপারে দেশের গণমাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমসমূহকে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার ও শুদ্ধ উচ্চারণ হোক এই প্রত্যাশা রইলো। মো: আল-আমিন মাসুম চিফ রিপোর্টার মুক্তিকন্ঠ সাবেক, সহ-সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাজশাহী জেলা শাখা। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা কলেজ। অধ্যায়নরত এল.এলবি মহানগর ল' কলেজ ।
    শুদ্ধ বাংলা ভাষা চর্চায় বর্তমান প্রজন্মের অনাগ্রহ

    মানুষ তার মনোভাব প্রকাশ করে থাকে ভাষার মাধ্যমে। প্রতিটি মানুষের কাছে নিজস্ব মাতৃভাষায় কথা বলার যে আত্নতৃপ্তি; অন্য ভাষায় তা হয়না। তাই মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম।

     

    আমাদের ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। প্রতিবছর এই মাসটি এলে আমরা আমাদের নিজস্ব মাতৃভাষা বাংলাকে গুরুত্ব দেয়, বাংলা ভাষার কথাবলি।বাংলা ভাষা নিয়ে আমরা আলোচনা সভা, সেমিনারের আয়োজন করে থাকি। শ্রদ্ধার সহিত ভাষা শহীদের স্মরণ করে থাকি। সর্বত্র বাংলা ভাষার ব্যবহার ও বাংলা ভাষা ছড়িয়ে দেওয়ার নানা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।

     

    এ মাসে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে আয়োজন হয় বইমেলার। তার মধ্যে বাংলা একাডেমির বইমেলা আমাদের সকলের কাছে প্রাণের মেলা হিসেবে পরিচিত। অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বই মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত থাকে লেখক,পাঠক, প্রকাশ, ও কবিদের পদচারণায়।

     

    ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) মাতৃভাষা রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আন্দোলন সংঘটিত করে ভাষার জন্য আত্ন বলিদান দিয়েছিলো বাংলার অগনিত দামাল ছেলেরা। শহীদ হয়েছিলো রফিক,জব্বার,শফিউর,সালাম,বরকত সহ অনেকেই। এটাই ছিলো বিশ্বে মায়ের ভাষার জন্য প্রথম শহীদ হওয়ার ঘটনা। যার ফলশ্রুতিতে ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা  ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহেে এ দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।

     

    এখন প্রশ্ন হচ্ছে; আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি কতটুকু যত্নবান?

    বর্তমানে আমাদের বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ।

    গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরাকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে; তরুণদের বাংলা উচ্চারণ নিয়ে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।”প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষনে বলেন, ইদানিং বাংলা বলতে গিয়ে ইংরেজি বলার প্রবনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। জানিনা এটা অনেক ছেলেমেয়ের মাঝে সংক্রামক ব্যাধির মত ছড়িয়ে গিয়েছে। তারা মনে করে এভাবে কথা না বললে সম্মান ক্ষুন্ন হয় এমন একটা ভাব তাদের। এই জায়গা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। অন্য ভাষার প্রতি বৈরিতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিজের ভাষা আগে শিখতে হবে। অন্য ভাষাও শিখতে হবে ,তবে মাতৃভাষাকে ভুললে চলবেনা।”

     

    বর্তমান প্রজন্মের বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তা তরুণদের মাঝে লক্ষনীয়।

     

    দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়েও উঠছে প্রশ্ন? বাংলা ভাষা শিক্ষাকে উপেক্ষা করে বিদেশি ভাষাকে গুরুত্বের সহিত দেখানো হচ্ছে। বিভিন্ন শ্রেণীতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীর মাঝে বিশেষ করে ইংরেজি বলার প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের মাঝে বাংলা শব্দের ভুল বনান, উচ্চারণ লক্ষ করা যাচ্ছে।
    শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে বিদেশি সংস্কৃতি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাজানো হচ্ছে নানা ধরনের হিন্দি ও বিদেশি গান। ছেলে ও মেয়েরা উক্ত গানের তালেতালে নুত্য করছে।

    বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে ভুল বানানের ছড়াছড়ি।
    সরকারি নানা দপ্তরের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ভুল বানান নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে।

    আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রচারপত্রে, ব্যানার, ফেস্টুন,বিলবোর্ড, সাইনবোর্ডে বাংলাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। মহামান্য হাইকোর্টের রায় থাকা স্বত্বেও সাইনবোর্ড, বিলবোর্ডে বাংলা নাম ব্যবহার না করে ইংরেজিতে লেখা হচ্ছে।

    দু:খের বিষয় এইযে, বর্তমানে গণমাধ্যম ও সংবাদপত্রেও ভুল বানান লক্ষ করা যাচ্ছে। বাংলা একাডেমির প্রমিত বানান অনুসরণ না করে লেখা হচ্ছ খবর।

    সুতারাং বাংলা ভাষার ব্যবহার, বানান নিয়ে; বিভিন্ন ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ও প্রতিষ্ঠানসমূহের ভুলের কথা বলে শেষ করা যাবেনা।এখন সময় থাকতে তরুণদের মাঝে বাংলা ভাষার প্রতি মনোনিবেশ করা ও ভালোবাসা জাগানোর জন্য অভিভাবক, শিক্ষক, সিনিয়রদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। এ ব্যাপারে দেশের গণমাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমসমূহকে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে।

     

    সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার ও শুদ্ধ উচ্চারণ হোক এই প্রত্যাশা রইলো।

     

    মো: আল-আমিন মাসুম

    চিফ রিপোর্টার মুক্তিকন্ঠ

    সাবেক, সহ-সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাজশাহী জেলা শাখা।

    স্নাতক ও স্নাতকোত্তর, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা কলেজ।

    অধ্যায়নরত এল.এলবি মহানগর ল’ কলেজ ।